Skip to content

ভিসা আবেদন পত্র জমা দেয়ার পূর্ব শর্ত সমূহ

ভিসা আবেদন পত্র জমা দেয়ার পূর্ব শর্ত সমূহ একটি দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য অবশ্যই পাসপোর্ট এর সাথে ভিসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিসা ছাড়া আপনি এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না। তবে আপনি বাংলাদেশ থেকে ভিসা ছাড়া ৪১ টি দেশে প্রবেশ করতে পারবেন।

ওই ৪১ টি দেশের ভিসা না লাগলেও, অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট থাকতে হবে। তা না হলে ওইসব দেশে ও প্রবেশ করতে পারবেন না।

ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে কিছু প্রসেস অবলম্বন করে চলতে হয়। তা না হলে ভিসা পাওয়া যায় না। ভিসা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে তাহলে চলুন ভিসা আবেদন পত্র জমা দেয়ার পূর্ব শর্ত সমূহ সম্পর্কে জেনে আসি |

পাসপোর্ট হয়েছে কিনা চেক 

 

ভিসার প্রকারভেদ

১. ভিসা অন অ্যারিভাল

২. ফ্রী এন্ট্রি ভিসা

৩. ই ভিসা বা ইলেকট্রনিক ভিসা

৪. ট্রানজিট ভিসা

৫. হলিডে ওয়ার্ক ভিসা

৬. সেনজেন ভিসা

৭. ট্রাভেল বা টুরিস্ট ভিসা

৮. ইমিগ্রন্ট ভিসা

৯. নন ইমিগ্রন্ট ভিসা

১০. ম্যারিজ ভিসা

১১. সেকেন্ড হোম প্রোগ্রাম ভিসা

১২. বিজনেস ভিসা

১৩. ওয়ার্ক ভিসা

১৪. মেডিকেল ভিসা

ভিসা অন অ্যারিভাল

প্রথমে প্লেনের টিকিট কেটে আপনি একটি দেশে প্রবেশ করার পরে ইমিগ্রেশনে আপনার কাগজপত্র জমা দিলে আপনার পাসপোর্ট এর মধ্যে যে ভিসা লাগিয়ে দেওয়া হয় তাকে ভিসা অন অ্যারিভাল বলে।

ফ্রী এন্ট্রি ভিসা

দুটি দেশের চুক্তি অনুযায়ী একটি দেশের নাগরিক অন্য দেশে কোন প্রকার ভিসা ছাড়াই শুধুমাত্র পাসপোর্ট এর মাধ্যমে প্রবেশ করাকে ফ্রী এন্ট্রি ভিসা বলে।

ইলেকট্রনিক ভিসা

কোন ভিসাকে অনলাইনের মাধ্যমে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই চেক করাকে ইলেকট্রনিক সিসা বলে।

ট্রানজিট ভিসা

কোন একটি দেশের মাধ্যমে আরেকটি দেশে যাওয়ার প্রসেসকে ট্রানজিট ভিসা বলে।

হলিডে ওয়ার্ক ভিসা

পড়াশোনা বা অস্থায়ীভাবে কোন কাজ করার জন্য যে ভিসা দেওয়া হয় তাকে হলিডে ওয়ার্ক ভিসা বলে।

সেনজেন ভিসা

এই বিচার মাধ্যমে আপনি একটি দেশের ভিসা লাগিয়ে ইউরোপের মোট ২৬ টি দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন।

টুরিস্ট ভিসা

একটি দেশ থেকে অন্য দেশে ঘুরতে যাওয়ার জন্য যে ভিসা দেওয়া হয় তাকে টুরিস্ট ভিসা বলে।

ইমিগ্র্যান্ট ভিসা

ইমিগ্র্যান্ট ভিসার মাধ্যমে আপনি একটি দেশে পার্মানেন্টলি বসবাস করতে পারবেন। সাধারণত ব্যবসায়ীক এবং হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ছাড়া এই ধরনের ভিসা দেওয়া হয় না।

নন ইমিগ্রন্ট ভিসা

স্বল্প সময়ের কোন কাজের জন্য (যেমন: মেডিকেল, ব্যবসা ইত্যাদি) এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য এই ভিসা দেওয়া হয়।

ম্যারিজ ভিসা

কোন একটি দেশের কোন ব্যক্তি যদি অন্য দেশের কোনো নাগরিককে বিয়ে করে তাহলে এই ভিসা দেওয়া হয়। এ ভিসার মাধ্যমে আপনি সেই দেশের নাগরিক হতে পারবেন।

সেকেন্ড হোম প্রোগ্রাম ভিসা

বিশাল পরিমাণে টাকা ইনভেস্ট করে যখন আপনি অন্য কোন দেশে থাকতে চান তখন এই ধরনের ভিসা দেওয়া হয়।

বিজনেস ভিসা

ব্যবসায়ীক কাজে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য যে ভিসা দেওয়া হয়ে থাকে বিজনেস ভিসা বলেন।

ওয়ার্ক ভিসা

কাজ করার উদ্দেশ্যে একটি দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে ওয়ার্ক ভিসা বলে।

মেডিকেল ভিসা

রোগীকে একটি দেশ থেকে অন্য দেশে মেডিকেল চেকআপ এর উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে ভিসা দেওয়া হয় তাকে মেডিকেল ভিসা বলে।

ভিসার আবেদনের জন্য শর্ত সমূহ

 

১. আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ অন্তত ছয় মাস বা তার বেশি থাকতে হবে।

২. আপনার পাসপোর্ট এর মধ্যে নূন্যতম তিনটি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে।

৩. আবেদনপত্র পূরণ করার সময়ে পাসপোর্ট নম্বর সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

৪. পাসপোর্ট এর মেয়াদ কবে শেষ হবে সেই তারিখ এবং পাসপোর্ট যদি ইস্যু করা থাকে সেই তারিখ আবেদনপত্রে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

৫. আবেদনপত্রে আপনার নিজের নাম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

৬. আবেদনপত্রে অবশ্যই স্ক্যান করা ছবি থাকতে হবে।

৭. আগের কোন পাসপোর্ট থাকলে সেই পাসপোর্ট এর একটি কপি আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে, যদি সেটি হারিয়ে যায় তাহলে অবশ্যই থানার জিডির একটি কপি আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

৮. আগের ভিসা ইস্যু করার তথ্যগুলো আবেদনপত্রে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

৯. আপনি যে দেশে যেতে চাচ্ছেন ওই দেশের এম্বাসি একটি রেফেরেন্স নেওয়া লাগবে।

১০. বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানার একটি প্রমাণ দেখাতে হবে। যেমন: বিদ্যুৎ বিলের কপি, গ্যাস বিলের কপি ইত্যাদি।

১১. আপনি বর্তমানে কি কাজ করেন সেটা আবেদনপত্র সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

১২. আপনার নাম এবং জন্মতারিখ জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের সাথে মিল রেখে সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

১৩. আবেদনপত্র পূরণ করার পর ৮ দিনের মধ্যে সেই আবেদনপত্রটি আপনার নিকটস্থ ভিসা কেন্দ্রে জমা দিতে হবে। (সময় কম বেশি হতে)

১৪. যে ব্যক্তি আপনার আবেদনপত্রটি জমা দিবে এবং যে ব্যাংকের মাধ্যমে ভিসা ফি পরিশোধ করবেন, সেই তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করবেন।

ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে করণীয়তা

১. আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারবেন, তবে ভুল কোনো তথ্য বা ইনফরমেশন দিয়ে ভিসার আবেদন করতে যাবেন না। এতে করে আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার নেয়ার অধিকার ভিসা কর্তৃপক্ষ রাখে। তাই এই ধরনের ঝামেলা করতে যাবেন না।

২. একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি দেশদ্রোহী মামলা, খুনের মামলা, দুর্নীতির মামলা, জঙ্গিবাদের মামলা ইত্যাদি থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির ভিসা পাওয়ার আশা ছেড়ে দেওয়াই ভালো। কারণ এই ধরনের ব্যক্তিদেরকে কোন দেশ থেকে ভিসা দেওয়া হয় না। যদি এই ধরনের ব্যক্তিদের আগে কোন ভিসা থাকে, তাহলে যখন তার উপরে কোনো মামলা হবে তখন তার ওই ভিসাটি সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করা হবে।

৩. অনেকেই একটি আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে একাধিক ভিসার জন্য আবেদন করেন। তাদেরও ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে। কারণ আপনার তথ্যগুলো যদি ভুল হয় তাহলে আপনার বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নেবে।

৪. আবার অনেকেই আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও নতুন করে আবার আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন করে ভিসার জন্য আবেদন করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই আবেদন গ্রহণযোগ্য হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের আবেদন গ্রহণযোগ্য হয় না। এছাড়া জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম নিবন্ধনের নকল করার জন্য আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে পারে।

৫. ভিসার জন্য আবেদন করার পরে কোন ধরনের মামলায় জড়াবেন না। কারণ কোন মামলা ধারীর ভিসা বেশিভাগ সময় এম্বাসী থেকে ক্যানসেল করে দেয়া হয়। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা বেশি হয়।

৬. ইউরোপের কোন দেশে যেতে হলে অবশ্যই আপনার ইংরেজিতে পারদর্শী হতে হবে। আপনি যদি ইংরেজি একটুও না জানেন, তাহলে ইউরোপের কোন দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া ইউরোপের কোন দেশের ভিসা পেতে হলে অবশ্যই সে দেশের ভিসার জন্য আবেদন করে ইন্টারভিউ দিতে হয়।

৭. অবশ্যই আপনার মেডিকেল চেকআপ করিয়ে নেবেন, তা না হলে ইমিগ্রেশনের সময় আপনি আটকে দেওয়া হবে। মেডিকেল চেকআপের সময় যদি আপনার গুরুতর কোন রোগ ধরা খায়, তাহলে আপনাকে ভিসা দেওয়া হবে না। বিশেষ করে মেডিকেল চেকআপের সময় যদি আপনার শরীরের ছোঁয়াচে কোন রোগ ধরা খায়, যেটা প্রাণঘাতী। তাহলে আপনি কখনোই ভিসা পাবেন না। তবে আপনি মেডিকেল ভিসা পেতে পারেন।

৮. ভিসার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের দালাল পাবেন, তাদের থেকে দূরে থাকাই উত্তম। দালালরা আপনার তথ্য ব্যবহার করে আপনার সেই ভিসাটি অন্য কাউকে দিয়ে দিতে পারে। তাই দালালকে আপনার সঠিক ইনফরমেশন কখনো দিবেন না। বর্তমানে এই ধরনের ঘটনা অহরহ করতেছে। তাই এগুলো থেকে অনেক দূরে থাকবেন। যদি আপনি এই ধরনের কোন সমস্যায় পড়েন, তাহলে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ ভিসা অফিস অথবা পুলিশ স্টেশনে দ্রুত অভিযোগ করুন। তারা সে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

পরিশেষে, আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা শর্টকাটে কোন কাজ করতে চাই। যার ফলে বিভিন্ন জায়গায় আমরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ি। ভিসা বা পাসপোর্ট এর আবেদনের ক্ষেত্রে কোন দালালদের ফাঁদে না পড়ে, নিজের ভিসা-পাসপোর্ট নিজেই আবেদন করুন। এতে করে যেমন আপনার খরচ বাড়বে তেমনি আপনার তথ্যগুলো সুরক্ষিত থাকবে। বাংলাদেশ সরকার ধারা ভিসা পাসপোর্ট এর জন্য ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত ফি’র এক পয়সাও বেশি কতৃপক্ষকে দেবেন না। এতে করে তারা আরো বেশি লোভী হয়ে যাবে।

আশা করি আজকের পোস্ট এর মাধ্যমে আপনারা কিছু জানতে পেরেছেন।

1 thought on “ভিসা আবেদন পত্র জমা দেয়ার পূর্ব শর্ত সমূহ”

  1. Pingback: ইউরোপের  যে দেশগুলোর ভিসা সহজে পাওয়া যায় -

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *