Skip to content

ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৩

আজকে আমরা ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমানে বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা কিংবা উচ্চ শিক্ষা ইত্যাদি নানাবিধ কাজে ই-পাসপোর্ট অনিবার্য একটি বিষয়। কিন্তু ই পাসপোর্ট বানানো এতটাও সহজ না যে, চাইলেই যখন-তখন বানিয়ে ফেলতে পারবেন। তার উপর আমাদের দেশে পাসপোর্ট সময়মতো হাতে পাওয়া প্রায় অসম্ভব বলা যায়। তাই আমাদের আগে থেকেই ই পাসপোর্ট বানিয়ে রাখতে হবে। কিন্তুন পাসপোর্ট এর আবেদন করতে হলে আমাদের অবশ্যয় জানা জরুরী যে পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে। কেননা, পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজ লাগে সে বিষয়ে যদি না জানা থাকে তাহলে আবেদন করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই সমস্যার সম্মুখীন হইতে হবে। তো চলুন দেখে নিই ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।

ই পাসপোর্ট কী?

প্রথমেই আমাদের জেনে নেওয়া উচিত ই পাসপোর্ট টা কি? অন্যান্য দেশ এর মতো বর্তমানে  হাতে লেখা, মেশিন রিডেবল যুগ শেষ করে আমাদের দেশেও ই পাসপোর্ট যুগে চলে এসেছে। মূলত ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ই পাসপোর্ট। ই পাসপোর্ট খুবই নিরাপদ একটি পাসপোর্ট। কারণ এটি একটি বায়োম্যাট্রিক পাসপোর্ট এবং এই পাসপোর্ট এ একটি ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ সংযুক্ত থাকে। এই চিপের মধ্যেই পাসপোর্টধারীর সকল তথ্য বহাল থাকে। এই ই পাসপোর্ট এর চিপে যে সকল তথ্য থাকবে টা হলঃ

  • পাসপোর্টধারী ব্যাক্তির ৩ ধরণের ছবি।
  • পাসপোর্টধারী ব্যাক্তির ১০ আঙুলের ছাপের তথ্য।
  • পাসপোর্টধারী ব্যাক্তির চোখের আইরিশ তথ্য ।

ফলে যেকোনো দেশের কর্তৃপক্ষ পাসপোর্টধারী ব্যাক্তির সম্পর্কে সকল তথ্য খুব সহজেই জানতে পারবে। আর, এই মাধ্যমে পিকেআই দ্বারা ই-পাসপোর্ট এ বিদ্যমান তথ্য সহজেই যাচাই করা হয়। এজন্যই বর্তমানে ই পাসপোর্ট জালিয়াতি করা খুবই কঠিন।

আরো পড়ুনঃ পাসপোর্ট চেক করুন অনলাইনে | Passport Check online BD

ই পাসপোর্টের সুবিধা কী কী?

কিছুদিন আগেও পাসপোর্ট করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হত। টাকা পয়সা থেকে শুরু করে আর বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশেও ই পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সাধারণ পাসপোর্ট এর চেয়ে ই পাসপোর্ট এর সুবিধা গুলো প্রায় অনেকগুণ বেশি। ই পাসপোর্ট এর সবচেয়ে সুবিধা জনক দিকগুলোর মধ্যে একটি হলো অনলাইনে আবেদন। আপনি ই পাসপোর্ট এর জন্য ঘরে বসে নিজে নিজেই খুব সহজে আবেদন করতে পারবেন। ই পাসপোর্টের সুবিধা গুলো নিম্নে দেওয়া হলোঃ

  • এই ই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে একজন ব্যাক্তি খুব সহজে অ দ্রুততার সাথে যে কোন দেশ এ যাতায়াত করতে পারবেন।
  • নিরাপত্তা কঠোর থাকায় এই পাসপোর্ট জালিয়াতি করা খুবই কঠিন।
    এই পাসপোর্ট এর জন্য ই-গেট ব্যবহার করে যাতায়াত করতে হবে। ফলে যে কোন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হবে না। মুহূর্তেই ইমিগ্রেশন হয়ে যাবে।
  • একজন ব্যাক্তি যখনই ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে ভ্রমন করবেন, সঙ্গে সঙ্গে সেটি কেন্দ্রীয় তথ্যাগারের সাথে যোগাযোগ করে খুব সহজে সেই ব্যাক্তির সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবে।
  • ই-গেটে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। সেখানে দাঁড়ালে ক্যামেরা নিজ থেকেই পাসপোর্ট ধারী ব্যাক্তির ছবি তুলে নেবে।
  • যাচাইয়ে কোন সমস্যা থাকলে সাথে সাথে লালবাতি জ্বলে উঠবে।
  • এমনকি কারো বিরুদ্ধে যদি কোন ধরণের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকে, তাহলে সেটিও সাথে সাথে জানা যাবে এবং তাকে আটকানো যাবে।

উপরিউক্ত বিষয় গুলো ছাড়াও ই পাসপোর্ট এর আরও অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ  পাসপোর্ট ডেলিভারি চেক অনলাইন

ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

বর্তমানে পাসপোর্ট এর চেয়ে ই পাসপোর্ট এর জনপ্রিয়তা অনেক বেরে গেছে। কারণ ই পাসপোর্ট এর সুবিধা অন্য সকল পাসপোর্ট এর থেকে অনেক বেশি। এই পাসপোর্ট এর যাবতীয় কাজ আমরা ঘরে বসেই সমপন্ন করতে পারি। কিন্তু এর আগে আমাদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে সে বিষয়ে অবগত থাকতে হবে। নিম্নে আমরা ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবোঃ

  • প্রথমত আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে। যদি জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে তাহলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ বা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মধ্যে যে কোন একটি অবশ্যই থাকতে হবে।
  • করোনা সংক্রমণের পর থেকে ই পাসপোর্ট করার জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করা থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী যদি একজন শিক্ষার্থী হয় তাহলে অদ্ধায়রত প্রতিষ্ঠানের স্টুডেন্ট আইডির ফটোকপি করে রাখতে হবে।
  • পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার সময় আপনাকে একটি রশিদ দেওয়া হবে সেটি সংগ্রহ করে রাখতে হবে। কারণ আবেদন করার সময় এই রশিদ টি জমা দিতে হবে।
  • আবেদনকারীর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ দেওয়ার জন্য তার নাগরিক সনদপত্র থাকতে হবে। বর্তমান ঠিকানার জন্য স্টুডেন্ট হলে স্কুলের প্রত্যয়ন পত্র, চাকরিজীবী হলে কর্মস্থলের প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
  • ই পাসপোর্ট করার সময় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
  • আবেদনকারী সরকারি বা বেসরকারি যে অফিসেই চাকরি করুক তাকে সে অফিসের প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
  • আপনি যদি বিবাহিত হন তাহলে আপনার বৈবাহিক সনদ সংগ্রহ করতে হবে। আর যদি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে তাহলে তালাকনামা সংগ্রহ করতে হবে।

ই পাসপোর্ট করার জন্য উপরোক্ত এই কয়েকটি কাগজপত্র অবশ্যই প্রয়োজন হবে। এই কাগজ গুলো সংগ্রহ করা হলে আপনি অনলাইনে ই পাসপোর্ট এর জন্য কোন সমস্যা ছাড়াই আবেদন করতে পারবেন।

অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে

আবেদনকারীর বয়স যদি ছয় বছরের কম থাকে তাহলে যা যা লাগেঃ

  • ৩ আর সাইজের ছবি তুলে রাখতে হবে।
  • মাতা অথবা পিতার মধ্যে যে কোন একজনের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর অবশ্যই সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
  • ইংলিশ ভার্সন এর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে হবে।

বয়স যদি ১৮ বছরের থেকে কম হয়ে থাকে তাহলে যা যা লাগেঃ

  • মাতা অথবা পিতার যে কোন একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অবশ্যই থাকতে হবে।
  • ইংলিশ ভার্সন এর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে।

আবেদনকারীর বয়স ১৮-২০ বছর হলে যা যা লাগেঃ

  • নিজের জাতীয় ‍পরিচয়পত্র অথবা,
  • ইংলিশ ভার্সন এর নিজের অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ।

পাসপোর্ট আবেদনকারীর বয়স যদি ২০ বছরের বেশি হয় সে ক্ষেত্রে আবেদনের জন্য ভোটার আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক। ‍তবে, বিদেশে অবস্থিত পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ইংলিশ ভার্সন এর অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়েও আবেদন করা যাবে।

ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

ই- পাসপোর্ট সাধারণত তিন ধরণের হয়ে থাকে। অতি জরুরি, জরুরি ও সাধারণ এই ৩ ধরণের হয়ে থাকে। আবার ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদি দুই ধরণের জন্য ই-পাসপোর্টের জন্য ফিও ভিন্ন হয়ে থাকে।

৫ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার জরুরি মাধ্যমে পাসপোর্ট ৭ দিনে পেতে হলে ফি দিতে হবে ৫,৫০০ টাকা এবং সাধারণ পাসপোর্ট ১৫ দিনে পেতে হলে ফি দিতে হবে ৩৫০০ টাকা। ই-পাসপোর্ট ২ দিনে অর্থাৎ অতি জরুরী পেতে হলে ফি দিতে হবে ৭,৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্ট সাধারণ ভাবে ১৫ দিনে পেতে হলে ফি দিতে হবে ৫০০০ টাকা। জরুরি পাসপোর্ট ৭ দিনে পেতে হলে ফি দিতে হবে ৭০০০ টাকা এবং অতি জরুরি পাসপোর্ট ২ দিনে পেতে হলে ফি দিতে হবে ৯০০০ টাকা।

শেষ কথা

আশা করি, ই পাসপোর্ট কি কি লাগে সে বিষয়ে ইতোমধ্যে আমাদের নিবন্ধন এর মাধ্যমে পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এই বিষয় নিয়ে যদি কোন সংশয় থাকে বা ই পাসপোর্ট বিষয়ক কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *