১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম পাসপোর্ট প্রতিটি দেশের নাগরিকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি একটি দেশ থেকে আরেকটি দেশে ভ্রমণ করতে চান বা কাজ করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পাসপোর্ট এর প্রয়োজন। পাসপোর্ট ছাড়া আপনি এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পারবেন না। হয়তো কিছু দেশের সাথে কিছু দেশের চুক্তি থাকার কারণে ভিসা ছাড়া এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে পারবেন। কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়া আপনি পৃথিবীর কোন দেশে যেতে পারবেন না।
আপনার অবস্থানের উপর নির্ভর করে পাসপোর্ট বিভিন্ন রকমের হতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের দুই ধরনের পাসপোর্ট পাওয়া যায়। একটি হলো সাধারণ পাসপোর্ট এবং অন্যটি হলো ই-পাসপোর্ট বা ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট।
আরো দেখে আসতে পারেনঃ
বাংলাদেশি পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
ই-পাসপোর্ট কি?
১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম
ই-পাসপোর্ট হলো এমন এক ধরনের পাসপোর্ট যে পাসপোর্ট এর সকল ধরনের তথ্য একটি সার্ভারে জমা থাকে। আপনি যখন এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশনের জন্য যাবেন তখন ই-পাসপোর্ট দ্বারা একটি মেশিনের মাধ্যমে মাত্র অল্প কিছু সেকেন্ড অপেক্ষা করলেই আপনার ইমিগ্রেশন শেষ হয়ে যাবে।
কিন্তু আগের পাসপোর্ট গুলোর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অনেক সময় লেগে যেত। বর্তমানে কয়েকদিন আগে আমাদের দেশে ই-পাসপোর্ট এর জন্য ই-ইমিগ্রেশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই সিস্টেমে মাত্র ১৮ সেকেন্ডে আপনি আপনার ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
আরো দেখে আসতে পারেনঃ
১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করার নিয়ম
আপনি দশ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট কিভাবে তৈরি করতে পারবেন, অনলাইনে এবং পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে।
১. অনলাইনের মাধ্যমে
অনলাইনের মাধ্যমে 10 বছর মেয়াদি পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে পাসপোর্ট বিভাগের অফিস এর ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে। সেখানে যাওয়ার পরে আপনাকে সঠিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হওয়ার পরে আপনি নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন এ ক্লিক করুন। সেখানে ক্লিক করার পরে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করুন। তথ্যগুলো অবশ্যই আপনার অফিশিয়াল ডকুমেন্ট যেমন: জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধনের সাথে মিল রেখে পূরণ করবেন। তা না হলে পরবর্তীতে সংশোধন করার জন্য অনেক ধরনের ঝামেলায় পড়তে পারেন।
আপনার তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করার পরে আপনাকে কিছু ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি আপলোড করতে বলবে, সেগুলো আপলোড করে দিন। আপলোড করার পরে আপনার আবেদনের কপিটি পাসপোর্ট অফিসের সার্ভারে জমা হয়ে যাবে। তারপরে আপনাকে পাসপোর্ট এর জন্য পেমেন্ট করতে বলবে আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পেমেন্ট করতে পারেন, অথবা সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও টাকা জমা দিতে পারেন।
আপনার সকল তথ্য যদি সঠিক থাকে তাহলে আপনি এক মাসের মধ্যেই আপনার এই ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবেন।
আরো দেখে আসতে পারেনঃ
২. পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে
পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে 10 বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এর আবেদন করার জন্য আপনি আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে চলে যান। সেখানে যাওয়ার পরে আপনি সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এর আবেদন করবেন বলুন।
তারপরে সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আপনাকে একটি ফরম পূরণ করতে দিবে সেই ফরমটি সঠিক ভাবে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র কার জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী পূরণ করুন। ফরমটি পূরণ করার সময় কোন ধরনের ভুল করবেন না, তাহলে আপনার পাসপোর্ট এর ভুল চলে আসবে। সঠিকভাবে পূরণ করা শেষ হলে তারা আপনার কাছে কিছু কাগজ পত্রের ফটোকপি চাইবে। সে কাগজ পত্রের ফটোকপি এবং পূরণ করা ফরমটি সহ পাসপোর্ট অফিসে জমা দেন।
জমা দেওয়ার সময় আপনার থেকে পাসপোর্ট এর আবেদনের ফি দিতে বলবে আপনি চাইলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আবেদন ফি প্রদান করতে পারেন। তবে যেহেতু আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আবেদন করতেছেন তাই সরাসরি ক্যাশের মাধ্যমে পে করুন।
আমি আপনাকে পরামর্শ দিব অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর আবেদন না করে সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এর আবেদন করুন। কারণ অনলাইনের মাধ্যমে আপনি পাসপোর্ট এর আবেদন করলে সেটা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গিয়ে অনেক বেশি দেরি করবে। কিন্তু আপনি যদি পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন তাহলে আপনি আপনার ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট খুব তাড়াতাড়ি হাতে পেয়ে যাবেন।
আরো দেখে আসতে পারেনঃ
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক
১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট আবেদন এ কি কি কাগজপত্র লাগবে
১. জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন বা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি। জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই অনলাইন করা থাকতে হবে।
২. আপনার মেডিকেল সার্টিফিকেট। আপনার যদি গুরুতর কোন রোগ থাকে তাহলে আপনার পাসপোর্ট এর আবেদন বাতিল করবে।
৩. পুলিশ ভেরিফিকেশনের কপি।
৪. আপনার সদ্যতোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
৫. চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলর কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র।
১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি এয়ারপোর্টে খুব কম সময়ে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। এছাড়া আপনাকে ১০ বছর পাসপোর্ট রিনিউ বিষয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না। আপনার সকল তথ্য অনলাইনে থাকায় আপনি যেকোন দেশের এম্বাসি থেকে পাসপোর্ট এর সকল তথ্য জানতে পারবেন।
পরিশেষে, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার পাঁচ বছর এবং ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এর অপশন রেখেছে। তবে আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে বিদেশে অবস্থান করতে চান তাহলে অবশ্যই আমার পরামর্শ থাকবে ১০ বছর মেয়াদী ডিজিটাল পাসপোর্ট গ্রহণ করার জন্য। এতে করে পাসপোর্ট রি ইস্যু ঝামেলায় বার বার পড়তে হবে না।
আশা করি বন্ধুরা ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এর সকল তথ্য আপনারা এ পোস্টের মধ্যে পেয়েছেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আরো দেখে আসতে পারেনঃ
বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট (Biometric Passport) কি? আবেদন ও সংশোধন করার নিয়ম
আমি পাসপোর্ট করতে চাই কিভাবে করবো
পাসপোর্ট করতে প্রথমে NID card যেমন বয়স, মা বাবার নাম, নামের ভুল এসব ঠিক আসে কিনা দেখে টার পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ভিসা অফিস এ গিয়ে পাসপোর্ট করতে পারবেন