ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় আমরা অনেকেই আছি প্রতিদিন অনেকটা সময়ই ফেসবুকে অতিবাহিত করি। কেউ ফেসবুকে বিনোদন নিতে আসে, আবার কেউ দেশ-বিদেশের খবর জানতে ফেসবুকে সময় কাটায়। আপনি চাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে ঘরে বসে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন।
ফেসবুক হলো এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে প্রচুর পরিমাণে অডিয়েন্স রয়েছে। আপনি যদি আপনার একটি ক্যারিয়ার ফেসবুকের মাধ্যমে তৈরি করতে চান, তাহলে আপনি খুব একটা কষ্ট না করে ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার ক্যারিয়ারকে সুন্দরভাবে গঠন করতে পারবেন।
কথা না বাড়িয়ে চলুন ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নি |
আরো দেখে আসতে পারেনঃ অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশ
ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায়
ফেসবুক থেকে ইনকাম করার আগে অবশ্যইআপনার একটি ফেসবুক একাউন্ট থাকতে হবে | এবং একটি যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক পেজ থাকতে হবে | একটি ফেসবুক গ্রুপ থাকতে হবে | এসবের মাধ্যমে খুব সহজে ফেসবুক থেকে ইনকাম করা সম্ভব |
ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করা যায়। ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করতে হবে। সেই ফেসবুক পেজের মধ্যে আপনার নিজের তৈরি করা ভিডিও আপলোড করতে হবে। আপনি অন্য কোথাও থেকে ভিডিও কপি করে ফেসবুকে আপলোড করলে মনিটাইজেশন পাবেন না।
ভিডিও আপলোড করার পরে সেটার মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু ভিউ অতিক্রম করে মনিটাইজেশন করতে পারবেন। আপনার ফেসবুকের ওই ভিডিওটি মনিটাইজেশন হলে সেটার মধ্যে ফেসবুক বিভিন্ন ধরনের অ্যাডভান্টেজ দেখাবে। ওই এডভেটাইজ দেখানোর মাধ্যমে ফেসবুক আপনাকে তাদের ইনকামের একটি বড় অংশ দিবে। ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন জন্য অবশ্যই আপনার ফেসবুক পেজে ১০ হাজার ফলোয়ার এবং ভিডিওতে ৩০০০০ মিনিট ওয়াচ টাইম থাকতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে
আপনার যদি কোন ফেসবুক পেইজ বা প্রোফাইল থাকে যেখানে প্রচুর পরিমাণে ফলোয়ার রয়েছে, তাহলে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট (যেমন: অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট, দারাজ আফিলিয়েট, আলিবাবা অ্যাফিলিয়েট ইত্যাদি) থেকে তাদের পণ্য বিক্রি করে একটি ভালো কমিশনার করতে পারবেন।
ওইসব ওয়েবসাইটগুলো আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা একটি লিঙ্ক তৈরি করে দেবে। সেইলিং থেকে কেউ যদি কোনো ধরনের পণ্য কিনে তাহলে আপনার অ্যাফিলিয়েট একাউন্টে সেই পণ্যের একটি নির্দিষ্ট কমিশন যুক্ত হয়ে যাবে। বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে।
ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর মাধ্যমে
আপনার যদি ওয়েবসাইট থাকে এবং সেই ওয়েবসাইটের জন্য আলাদা একটি ফেসবুক পেজ থাকে, তাহলে আপনি আপনার ওয়েব সাইটের কনটেন্ট গুলো আপনার ফেসবুক পেজের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর সাথে যুক্ত করে ইনকাম করতে পারেন। ফেসবুক পেজে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল যুক্ত করার আগে অবশ্যই আপনার ফেসবুক পেজে ভালো পরিমাণে ফলোয়ার তৈরি করবেন।
কারন ফেসবুক পেজে যদি ফলোয়ার না থাকে তাহলে ফেসবুক পেজের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল থেকে আপনার ইনকাম আসবে না। ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর ফেসবুক আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টকে ফেসবুকে অটোমেটিক ইমপোর্ট করবে এবং সেটাতে বিভিন্ন ধরনের এডভেটাইজ দেখাবে। সেই এডভেটাইজ বিনিময় ফেসবুক আপনাকে পে করবে।
পেইড মার্কেটিং
আপনার যদি কোন ফেসবুক পেইজ বা প্রোফাইল থাকে যেখানে প্রচুর অডিয়েন্স রয়েছে, তাহলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য এডভেটাইজ করে অনেক বেশি ইনকাম করতে পারেন। বর্তমানে পেইড মার্কেটিং অনেক বেশি জনপ্রিয়।
বিভিন্ন কোম্পানী গুলো প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ফেইসবুক পেইজ রিসার্চ করে, যাদের বেশি অডিয়েন্স বা অ্যাক্টিভিটি থাকে তাদেরকে তারা লিস্ট করে। ওই লিস্ট অনুযায়ী কোম্পানিগুলো ফেসবুক পেজের উনারদের কাছে পেইড মার্কেটিংয়ের জন্য মেসেজ করে। কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য আপনার পেজে মার্কেটিং করার জন্য হিউজ পরিমান পে করতে পারে। বর্তমানে পেইজ মার্কেটিং করে অনেক ফেসবুক পেজের মালিকরা প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে।
পণ্য বিক্রি করে
আপনার যদি কোন নির্দিষ্ট প্রডাক্ট থাকে তাহলে আপনি চাইলে ফেসবুকের মাধ্যমে সেটা বিক্রি করতে পারেন। ফেসবুক প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য আলাদা মার্কেটপ্লেস চালু করেছে। যেখানে আপনি আপনার পণ্য খুব সহজেই আপনার নির্দিষ্ট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।
ফেসবুকের মধ্যে অনেক বেশি ইউজার থাকায় আপনার পণ্য বিক্রি করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এছাড়া আপনি যদি ফেসবুকের মাধ্যমে এডভেটাইজ করেন সেক্ষেত্রে আপনার পণ্য বিক্রির সম্ভাবনা আরও বেশি বেড়ে যাবে।
ফেইসবুক মারকেটপ্লেস এর মাধ্যমে
ফেসবুক পণ্য বিক্রি করার জন্য আলাদা মার্কেটপ্লেস অপশন চালু করেছে। ফেসবুকের এই অপশন থেকে আপনি আপনার পন্য খুব সহজেই বিক্রি করতে পারবেন। ফেসবুকে রয়েছে অনেক বেশি ইউজার এবং ফেইসবুক এর অ্যালগরিদম অনেক বেশি উন্নত। যার কারণে আপনার পণ্য যদি ফেসবুকের মাধ্যমে এডভেটাইজ করেন তাহলে আপনার পণ্য বিক্রির সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে।
ফেসবুকে এডভেটাইজ করানোর জন্য অবশ্যই আপনার ডুয়েল কারেন্সি কার্ড থাকতে হবে। আপনি চাইলে সাময়িক সময়ের জন্য বিভিন্ন কোম্পানি থেকে ভার্চুয়াল কার্ড নিতে পারেন। পরবর্তীতে আপনার ইনকাম হলে আপনি ফিজিক্যাল কার্ড নিতে পারবেন। যেটার মাধ্যমে আপনি ফেসবুক থেকে শুরু করে গুগোল, ইউটিউব ইত্যাদিতে এডভেটাইজ করতে পারবেন।
কোর্স বিক্রি করে
আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে। আপনার যদি এমন কোনো বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকে (যেমন: গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও এক্সপার্ট ইত্যাদি) তাহলে আপনি সেই কোর্সগুলোর ভিডিও তৈরি করে সেই ভিডিও গুলো ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমানে অনলাইন কোর্স এর চাহিদা অনেক বেশি, যার কারণে আপনি আপনার কোর্স ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক সহজেই বিক্রি করতে পারবেন।
আপনার কোর্স যদি মানসম্মত হয়, সে ক্ষেত্রে আপনার কোর্স এর দাম যদি বেশি ও হয় তাহলেও আপনার কোর্স বিক্রি হবে।
ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে
আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন। আপনি যদি কোন কিছু নিয়ে অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে আপনি অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করতে পারেন এবং সেই ক্লাসের জন্য আলাদা একটি গ্রুপ খুলতে পারেন। সেই গ্রুপে যারা যুক্ত হতে চাইবে তাদের জন্য আলাদা একটি বিল পেমেন্ট এর অপশন তৈরি করতে পারেন।
যার ফলে কেউ যদি আপনার গ্রুপে যুক্ত হতে চায়, সেক্ষেত্রে তাকে আগে আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে এবং তারপরে সে ওই গ্রুপে জয়েন হতে পারবে।
অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোডের মাধ্যমে ইনকাম
আপনার যদি অনলাইন ইনকাম নিয়ম গ্রুপ থাকে, তাহলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির সাথে চুক্তি করে তাদের অ্যাপ্লিকেশনগুলো ডাউনলোড করিয়ে সেই কোম্পানিগুলো থেকে তার জন্য টাকা নিতে পারবেন। আপনি কোম্পানি থেকে যে পরিমাণ টাকা নিবেন তার একটি অংশ যে এপ্লিকেশন ডাউনলোড করবে তাকে দিতে পারবেন। এতে করে সে আরো বেশি অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করবে এবং আপনারও ইনকাম বাড়বে।
কোম্পানিগুলোর সাথে চুক্তি করার আগে অবশ্যই তারা যেন কোন ভাইরাস জনিত অ্যাপ্লিকেশন না দেয় সে বিষয়ে কথা বলে নেবেন। এছাড়া গ্রুপের মধ্যে এই অ্যাপ্লিকেশনের লিংক দেওয়ার আগে ওই অ্যাপ্লিকেশনটি আপনি বিভিন্ন স্ক্যানিং সফটওয়্যার দিয়ে স্ক্যান করে নেবেন। এতে করে আপনার গ্রুপের ব্যবহারকারীরা কোন সমস্যায় পড়বে না।
ইউটিউব সাবস্ক্রাইব এবং ফেসবুক ফলোয়ার বিক্রি করে
আপনি যদি ইউটিউব এর আনলিমিটেড ভিউ এবং সাবস্ক্রিপশন, এছাড়া ফেসবুকের আনলিমিটেড ফলোয়ার, আনলিমিটেড লাইক ইত্যাদির মতো সার্ভিস সম্পর্কে ভাল জানেন, তাহলে আপনি এইসব সার্ভিসগুলো ফেসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন। বর্তমানে এই ধরনের সার্ভিস এর চাহিদা সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমগুলোতে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আপনি চাইলে আপনার নিজের একটি অডিয়েন্স তৈরি করতে পারেন শুধুমাত্র এসব কাজ করার জন্য। সেই অডিয়েন্সদের এসব কাজ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পেমেন্ট করতে পারেন। এতে করে তারা আরো বেশি কাজ করবে এবং আপনার ইনকাম বাড়বে। আপনি যাদেরকে এসব সার্ভিস দিবেন তাদের সাথে কখনো প্রতারণা করবেন না। তাহলে আপনিও অনেক দিন যাবত এই ধরনের কাজ করে যেতে পারবেন।
সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করে
আপনি চাইলে বিভিন্ন বিদেশি অনলাইন স্ট্রিমিং সাইটগুলোর সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন। নেটফ্লিক্স, হটস্টার, সনিলিভ, এইচবিও ইত্যাদির মত অনলাইন স্ট্রিমিং সাইটগুলোর জনপ্রিয়তা আমাদের দেশে অনেক বেশি। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের কাছে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড না থাকায় তারাই এই ধরনের সার্ভিস গুলো কিনতে পারে না।
আপনি চাইলে খুব সহজে একটি কমদামে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড নিতে পারবেন। আপনি বিকাশের মাধ্যমে যাদেরকে এসব সার্ভিস বিক্রি করবেন তাদের থেকে পেমেন্ট নেবেন এবং আপনার কার্ডে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা লোড করবেন। এতে করে আপনি প্রতিদিন অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড দেওয়া হয়।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এসব কার্ড গুলো নিতে হলে আপনার অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস থাকতে হবে। আপনার যদি পাসপোর্ট না থাকে তাহলে আপনি অনলাইন থেকে বিভিন্ন ভার্চুয়াল ডুয়েল কারেন্সি কার্ড নিতে পারেন। সেগুলো নিয়েও আপনি অনলাইন স্ট্রিমিং সাইটগুলোতে পেমেন্ট করতে পারবেন।
বন্ধুরা আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আরো দেখে আসতে পারেনঃ ফেসবুক পেজকে জনপ্রিয় করার কয়েকটি উপায়
Pingback: মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় -