Skip to content

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম 2023

আপনি কি আপনার পরিবারের যারা বয়স্ক রয়েছে তাদের  জন্য বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে চান তাহলে আপনার  বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে|

আপনার পরিবারে যারা বয়স্ক রয়েছে তাদেরকে প্রতি মাসে সরকার কর্তৃক বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হয়। আপনার পরিবারের কেউ যদি বয়স্ক ভাতা না পেয়ে থাকে তাহলে আপনারা চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আগে বয়স্ক ভাতার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ অথবা উপজেলা পরিষদে গিয়ে আবেদন করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে সরকার জিটুপি পদ্ধতিতে বয়স্ক ভাতা প্রদান করে থাকে। অনলাইনে বয়স্ক ব্যথার জন্য আবেদন করার পরে সেটা যাচা বাছাই করে আপনার কাঙ্খিত মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বয়স্ক ভাতা প্রদান করে সরকার।

বয়স্ক ভাতা কি

বয়স্ক পাতা হল সরকার কর্তৃক একটি অর্থ সাহায্য। যেটা মূলত বয়স্ক দুস্থ এবং গরিব ব্যক্তিদেরকে দেওয়া হয়। অনেকেই বয়স্ক ভাতাকে নিম্ন চোখে দেখে, কিন্তু ৬৫ বছরের উর্ধ্বে সকল বয়সী ব্যক্তিদের বয়স্ক ভাতা অধিকার। কারণ সরকার আপনার টাকাই আপনাকে দিচ্ছে।

সরকারের এই আর্থিক সহযোগিতা পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষ সেই শর্তগুলো ও কাগজপত্র গুলো যাচাই-বাছাই করে কোন ব্যক্তি যদি বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য হয় তাহলে তাকে সেই ভাতা প্রদান করবে।

বাংলাদেশে বয়স্ক ভাতা চালু হয় কত সাল থেকে

বাংলাদেশের মূলত বয়স্ক ভাতা 1998 সাল থেকে চালু হয়। দেশের দুস্ত, গরিব এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য ১৯৯৭-১৯৯৮ অর্থ বছরে প্রথম বয়স্ক ভাতা চালু করে সরকার।

প্রথম অবস্থায় প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের ১০ জন পুরুষ এবং 10 জন মহিলাকে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বয়স্ক ভাতা পৌরসভা এবং নগরীতে চালু করা হয়। বর্তমানে বয়স্ক ভাতা অনেকটাই বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বাংলাদেশে বয়স্ক ভাতা কত টাকা

প্রথম যখন বয়স্ক ভাতা চালু করা হয়েছিল তখন বয়স্ক ভাতা প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে দেওয়া হতো। বর্তমানে প্রতি মাসে বয়স্ক ভাতা ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়। বয়স্ক ভাতার পরিমাণ খুব কম, তবে ভবিষ্যতে হয়তো এর পরিমাণ আরো বাড়ানো হবে।বয়স্ক ভাতার পরিমাণ বিভিন্ন অর্থবছরে বৃদ্ধি করা হয়েছে। হয়তো ভবিষ্যতেও এর পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।

বয়স্ক ভাতা কত বছর বয়সে দেওয়া হয়

সাধারণত বয়স্ক ভাতা পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬২ বছরের ঊর্ধ্বে হলে দেওয়া হয়। উক্ত বয়সের কম হলে বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হয় না।

বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা ও সর্তাবলী

  • অবশ্যই ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • যে এলাকা থেকে ভাতা গ্রহণ করবে সেই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র এবং অনলাইন জন্ম নিবন্ধন থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী পুরুষের ক্ষেত্রে বয়স ৬৫ এর ঊর্ধ্বে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে বয়স ৬২ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন বিবেচ্চ হবে।
  • যে ব্যক্তি বয়স্ক ভাতা গ্রহণ করবে সেই ব্যক্তির বার্ষিক আয় ১০ হাজার টাকার কম হতে হবে।

বয়স্ক ভাতা যারা পাবেন না

  • সরকারি কর্মচারী ও পেনশন ভোগী হলে।
  • দুস্ত মহিলাদের ভিজিটি কার্ড ধারী হলে।
  • অন্য কোন সরকারি অনুদান বা ভাতা প্রাপ্ত হলে।
  • কোন বেসরকারি সংস্থা হতে আর্থিক সাহায্য পেলে।

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম

বয়স্ক ভাতার আবেদন করার জন্য ভিজিট করুন এই http://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication লিংকে| এখান থেকে বয়স্ক ভাতা অপশন সিলেক্ট করে যাবতীয় ইনফরমেশন দিয়ে সাবমিট করলেই আপনার বয়স্ক ভাতার আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে |

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম

১. অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার জন্য প্রথমে এই লিংকে (http://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication) প্রবেশ করতে হবে। তারপর এখান থেকে নির্বাচন করুন অপশনে সিলেক্ট করে বয়স্ক ভাতার অপশনটি সিলেক্ট করুন।

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম

২. তারপর একটি পেজ ওপেন হবে সেখানে যে ব্যক্তির নামে বয়স্ক ভাতা করবেন তার নাম লিখুন। তারপর তার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার লিখুন এবং নিজের বক্সে জন্ম তারিখ লিখুন। এখন যাচাই করুন অপশনে ক্লিক করুন।

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম

৩. এখন দেখবেন আপনার কিছু তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। যে তথ্যগুলো পূরণ হবে না সেগুলো সঠিকভাবে কাগজপত্র দেখে পূরণ করে নিন।

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম

৪.  এই পর্যায়ে আবেদনকারীর কিছু অতিরিক্ত তথ্য দেওয়া লাগবে।

  1. বৈবাহিক অবস্থা
  2. শিক্ষাগত যোগ্যতা
  3. পারিবারিক সদস্য সংখ্যা
  4. পেশা ও বার্ষিক আয়
  5. স্বাস্থ্যগত তথ্য
  6. সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক সুবিধার তথ্য
  7. বাসস্থানের তথ্য ও ভূমির পরিমান

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার নিয়ম

৫. এই অংশে আপনার যোগাযোগের ঠিকানাটি প্রদান করতে হবে। আবেদন ঠিকানা, মোবাইল নম্বর (মোবাইল নম্বরটি অবশ্যই সচল রাখতে হবে), মোবাইল নম্বরটি কার সেটাও সিলেক্ট করে দিন, এছাড়া আপনার যদি ইমেইল থাকে তাহলে ইমেইল এড্রেস দিন। না থাকলে তো আবার দরকার নেই।

আপনার সব তথ্য যদি সঠিক থাকে তাহলে সংরক্ষণ করুন অপশনে ক্লিক করুন। সংরক্ষণ করুন অপশনে ক্লিক করার আগে অবশ্যই সব তথ্য গুলো আরো একবার চেক করে নিন। কারণ একবার সংরক্ষণ করুন অপশনে ক্লিক করলে পরবর্তীতে সেটা আর পরিবর্তন করতে পারবেন না।

 

৬. তারপর আপনাকে একটি ফরম প্রিন্ট করতে বলবে, সেটাতে ক্লিক করুন ক্লিক করলে একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড হবে। সেই পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে যে কোন কম্পিউটার দোকান থেকে প্রিন্ট করে নিন।

 

তারপর সেই প্রিন্ট করা কাগজটি এবং অন্যান্য কাগজপত্রগুলো নিয়ে সরাসরি উপজেলা মাঠকর্মী অথবা সমাজসেবা অফিসে জমা দিতে হবে। অবশ্যই ফর্মটি তে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা পৌরসভার কাউন্সিলের সাইন ও সিল করে নিতে হবে।

বয়স্ক ভাতার আবেদনের ফরম পিডিএফ ডাউনলোড

বয়স্ক ভাতার আবেদন অনলাইনে সঠিকভাবে করলে পরবর্তীতে একটি প্রিন্ট করার জন্য পিডিএফ ফাইল পাবেন। সে পিডিএফ ফাইলটি আপনার কম্পিউটারের সংরক্ষণ করে রাখুন। পরবর্তীতে এটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে।

বয়স্ক ভাতা আবেদনের শেষ তারিখ

উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিস থেকে প্রতিবছরই বয়স্ক ভাতা আবেদনের শেষ তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়। তাই সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নোটিসে খেয়াল রাখুন অথবা তাদের ওয়েবসাইটে যোগাযোগ রাখুন।

বয়স্ক ভাতার আবেদন যাচাই

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করার পরে সেই আবেদনটি সরাসরি আপনার নিকটস্থ উপজেলার সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে চলে যাবে। সেখানে যাওয়ার পরে আপনি অবশ্যই উপরে আবেদন করা ফরমটি এবং অন্যান্য কাগজপত্র গুলো নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিসে গিয়ে জমা দিবেন।

অধিদপ্তরের অফিসে গিয়ে জমা দেওয়ার পরে তারা আপনার কাগজপত্র এবং অনলাইনে প্রদান করা তথ্যগুলো মিলিয়ে দেখবে এবং সেগুলো সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করবে। আপনার সকল তথ্যগুলো যদি সঠিক থাকে তাহলে কয়েক মাসের মধ্যেই আপনি বয়স্ক ভাতা পেয়ে যাবেন। আর যদি আপনার তথ্য গুলোর মধ্যে কোন ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে আপনার আবেদন ক্যান্সেল করে দেওয়া হবে।

আরেকটা কথা হচ্ছে বয়স্ক ভাতা আবেদন করার সময় সব সময় মোবাইল ব্যাংকিং দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে করে যখন ভাতার টাকার জন্য আপনি উপযুক্ত হবেন তখন সরাসরি আপনার বিকাশ বা নগদে টাকা পেয়ে যাবেন।

বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং

আগে বয়স্ক ভাতা হাতে হাতে দেওয়া হতো। যার ফলে বিভিন্ন অসাধু লোক এবং দালাল বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তি লোকদের থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নিতো। যার ফলে পরবর্তীতে সরকার বয়স্ক ভাতা এবং অন্যান্য সরকারি ভাতা গুলো বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এ এবং ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

বর্তমানে আপনারা চাইলে বয়স্ক ভাতা বিকাশ এবং নকলের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনি যার কাছে বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করবেন সেখানে গিয়ে বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির একাউন্টে জায়গায় আপনার বিকাশ অথবা নগদ অথবা রকেট একাউন্ট নাম্বার প্রদান করতে হবে।

অ্যাকাউন্ট নাম্বার প্রদানের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাউন্টটি যার নামে খোলা তার নাম উল্লেখ করে দিতে হবে। অবশ্যই নিজের একাউন্টে নেওয়ার চেষ্টা করবেন, তা না হলে পরবর্তীতে এগুলো নিয়ে একটু ঝামেলা হতে পারে।

বন্ধুরা আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। যদি পোস্টটি সামান্য ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *