ফেসবুকের কোড বের করার নিয়ম ফেসবুক বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। ফেসবুকের মাধ্যমে আপনারা আপনাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন জিনিস শেয়ার করেন। ফেসবুক তাদের টাইমলাইনে ইউজারদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ফিচার যুক্ত করে। এই ফিচারগুলো মাধ্যমে ইউজাররা ফেসবুক ব্যবহার করতে আরো বেশি সুবিধা পায়।
এছাড়া ফেসবুকের মাধ্যমে পুরো বিশ্বে লক্ষ লক্ষ ব্যবসা ছড়িয়ে আছে। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইনে তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি করে। ফেসবুক যদি কয়েক মিনিটের জন্যও বন্ধ থাকে, সে ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বের কয়েক হাজার মিলিয়ন ডলার লস হবে। যেটা অল্প কিছুদিন আগেও হয়েছিল।
ফেসবুকের অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং থেকে বাঁচানোর জন্য ফেসবুক টু স্টেপ অথেন্টিকেশন সিস্টেম চালু করেছে। টু স্টেপ অথেন্টিকেশন সিস্টেমে আপনার মোবাইল নম্বরে বা ইমেইলে একটি কোড যাবে। সেই কোড ছাড়া কেউ আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না। ফেসবুকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ফেসবুক মাঝে মধ্যে তাদের কোড দিতে অনেক দেরি করে। ফেসবুকের কোড বের করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করা যাক |
আরো দেখে আসতে পারেনঃ ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়
ফেসবুকের কোড বের করার উপায়
ফেসবুকের কোড না আসা সমস্যার সমাধানের জন্য প্রথমে আপনারা ফেসবুকে সেটিং অপশনে গিয়ে, সিকিউরিটি অপশনে চলে যান। সেখান থেকে টু স্টেপ অথেন্টিকেশন অপশনে গিয়ে, ব্যাকআপ কোড অপশনে ক্লিক করে যে কোড গুলো আপনাকে দেবে সেগুলো কোথাও লিখে রাখুন। পরবর্তীতে যখন আপনি ফেসবুকে আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করবেন তখন আপনার থেকে লগ ইন কোড চাইলে, আপনি এখান থেকে যে কোন একটি কোড দিয়ে লগিন করতে পারবেন। ফেসবুকের কোড বের করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করা যাক |
আরো দেখে আসতে পারেনঃ অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশ
ফেসবুক একাউন্টের গোপনীয়তা
ফেসবুকের বিরুদ্ধে প্রতি বছর তাদের ইউজারদের ডাটা বিক্রি করার অভিযোগ ওঠে। প্রতিবছর এই অভিযোগের ভিত্তিতে ফেসবুকে কয়েক হাজার মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়। ফেসবুকে নিজের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য কিছু টিপস অবলম্বন করতে হয়।
১.ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড
আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন সেটা কখনোই কাউকে বলবেন না। আপনি যদি আপনার ইউজারনেম পাসওয়ার্ড অন্য কাউকে বলেন সে ক্ষেত্রে আপনার অ্যাকাউন্টের গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হবে। এতে করে আপনার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
২.ফেসবুকের ইমেইল
আমরা অনেকেই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করায় ইমেইলটি আমাদের ফেসবুক একাউন্টে যুক্ত করি। এটা খুবই ভুল কাজ, কারণ আপনার দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহার করা ইমেইলটি আপনার বেশি ভাগ মানুষেরাই জানে। যার ফলে আপনার ওই ইমেইল দ্বারা ফেসবুক আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তারা হ্যাক করতে পারবে। টাইট একটা করবেন ফেসবুক অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা কোনো একটি ইমেইল ব্যবহার করার। আর সেই ইমেইলটি আপনি অন্য কাউকে কখনোই বলবেন না।
৩জন্ম তারিখ
আপনার আপন জনেরা ছাড়া অন্য কেউ আপনার জন্ম তারিখ অবশ্যই না জানার কথা। ফেসবুক একাউন্টে অবশ্যই আপনার ডকুমেন্ট এর সাথে মিল রেখে জন্মতারিখ ব্যবহার করবেন। আর আপনার জন্ম তারিখ কোন third-party মানুষকে বলবেন না। আপনি ডকুমেন্টের সাথে মিল রেখে যদি আপনার জন্ম তারিখ ব্যবহার করেন, তাহলে কোন কারনে যদি আপনার আইডি ডিজেবল বা লকড হয় তাহলে ফেসবুকের কাছে আপিল করে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতে পারবেন।
৪.টু-স্টেপ অথেন্টিকেশন
টু স্টেপ অথেন্টিকেশন ফেসবুকের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সেটিং। আপনি সেটিং এ গিয়ে টু স্টেপ অথেন্টিকেশন যুক্ত করে রাখুন। আপনার একাউন্টে যদি এই সেটিংটি থাকে, তাহলে কেউ আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড জানলেও আপনার মোবাইল নম্বরে যে কোড আসবে সেই কোডটি না দেওয়া পর্যন্ত আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না। এতে করে আপনি মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারবেন আপনার একাউন্টে অন্য কেউ প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। ফলে আপনি দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন।
৫.থার্ড পার্টি লিংক
আমরা ভুলে অনেক সময় অথবা জেনেশুনে ফেসবুকের বিভিন্ন লিঙ্ক এ অকারণে ঢুকে যাই বা ক্লিক করি। ফেসবুকের মধ্যে বিভিন্ন হ্যাকাররা তাদের স্প্যাম হ্যাকিং লিংক প্রমোট করে। আপনি যদি সেসব লিংকে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ক্লিক করেন তাহলে আপনার ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এছাড়া অনেকেই আমাদেরকে ফেসবুক মেসেঞ্জার এর মাধ্যমে বিভিন্ন লিংক দেয়। সেই লিংক গুলোও কোনরকম স্ক্যান ছাড়া ওপেন করবেন না। আপনি যদি সেই লিংক গুলো কোনরকম স্ক্যান ছাড়া ওপেন করেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
৬.ফিশিং সাইট
অনলাইনের মধ্যে অনেকেই ফেসবুকের মত হুবহু ইন্টারফেস দিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট খুলে। আপনি যদি ভুলেও সে সব ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ফেসবুকের ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করেন, তাহলে আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সেই ওয়েবসাইট এডমিনের কাছে অটোমেটিকেলি চলে যাবে। যার ফলে আপনার একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যাবে। ফিশিং সাইট গুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ নিয়ে আসে। আপনি ফেসবুকের বাইরে বা অথরাইজড কোন ওয়েবসাইট ছাড়া কোথাও আপনার নিজের ফেসবুক একাউন্ট কানেক্ট করবেন না। এতে করে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
৭.অ্যাপ্লিকেশন বা ফাইল ডাউনলোড
ফেসবুকের মধ্যে আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন বা ফাইল দেখতে পাই এবং সেগুলো কোনো রকম বিবেচনা না করেই আমাদের ডিভাইসে ডাউনলোড করি। ফেসবুকের সেই সকল ফাইল বা অ্যাপ্লিকেশনে যদি কোনো ধরনের ভাইরাস থাকে বা হ্যাকিং টুলস থাকে তাহলে আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলে সেই হ্যাকিং টুলটা ইন্সটল হয়ে যাবে। এতে করে আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল এর নিয়ন্ত্রণ ওই অ্যাপ্লিকেশন বা ফাইলের মালিকের কাছে চলে যাবে। এতে করে সে আপনার সকল ধরনের একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে।
ফেসবুক একাউন্ট ডিজেবল থেকে বাঁচার উপায়
আপনার যদি একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ফেসবুক একাউন্ট হ্যাকারের হাত থেকে বা ডিজেবল হওয়া থেকে একাউন্ট বাঁচার উপায় জানা জরুরী | ফেসবুক একাউন্ট ডিজেবল থেকে বাচার উপায় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো |
আরো দেখে আসতে পারেনঃ ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার উপায়
১.ভুল তথ্য ব্যবহার না করা
অনেকেই বিভিন্ন ফেক ইনফরমেশন ব্যবহার করে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন। আপনার সেই ফেক অ্যাকাউন্ট যদি ফেসবুক কতৃপক্ষ ডিজেবল করে দেয় তাহলে সেটা আর ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। তাই কোনো ফেসবুক একাউন্ট খোলার সময় অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির ডকুমেন্ট এর সাথে মিল রেখে ইনফর্মেশন ব্যবহার করবেন। এতে করে কোনো কারণে যদি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্ট ডিজেবল করে দেয়, তাহলে আপনি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে আপনার ডকুমেন্টস গুলো পাঠিয়ে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
২.ফেসবুক কমিউনিটির ভায়োলেন্স
অনেকেই ফেসবুক কমিউনিটি ভায়োলেন্স সম্পর্কে জানেন না, তাই ফেসবুক ব্যবহারকারীরা অবশ্যই ফেসবুকের কমিউনিটি ভায়োলেন্স সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেবেন। ফেসবুকে এমন কিছু বিষয় বস্তু আছে যেগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি আপনি আপনার একাউন্ট থেকে ফেসবুকের নীতি ভঙ্গ করেন তাহলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্ট ডিজেবল করে দেবে।
৩.স্প্যাম লিংক
ফেসবুকের মধ্যে এমন অনেক লিংক আছে যেগুলো ফেসবুকে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। এসব লিংকগুলো কে ফেসবুকে স্প্যাম লিংক বলা হয়। ফেসবুকে এই ধরনের স্প্যাম লিংক ব্যবহার করবেন না। আপনি যদি বারবার এই ধরনের লিংক ফেসবুকে ব্যবহার করেন, তাহলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্ট ডিজেবল করে দেবে।
পরিশেষে, আপনার এলাকায় যে সিমের নেটওয়ার্ক সবচেয়ে বেশি থাকে সব সময় চেষ্টা করবেন সেই সিমটি ফেসবুক একাউন্টের সাথে যুক্ত করার জন্য। এতে করে আপনার ফেসবুকের কোড পাওয়ার জন্য সমস্যায় পড়তে হবে না।
আর ফেসবুকের সাথে যেসব ইমেইল এবং মোবাইল নম্বর গুলো যুক্ত থাকবে সেগুলো কাউকে জানাবেন না। এতে করে আপনি ফেসবুকে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবেন।
আজকের ফেসবুকের কোড বের করার নিয়ম পোস্টটি এই পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আরো দেখে আসতে পারেনঃ ফেসবুক পেজকে জনপ্রিয় করার কয়েকটি উপায়