প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম আমাদের দেশে বিভিন্ন কাজে প্রত্যায়নপত্রের প্রয়োজন হয়। প্রত্যয়নপত্র মূলত কোন একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে। প্রত্যায়ন পত্র হলো আপনার নিজের চারিত্রিক আচার-আচরণ ইত্যাদির সনদপত্র।
একটি প্রত্যয়ন পত্রের মধ্যে একজন মানুষের চারিত্রিক সকল বিষয় উল্লেখ করা থাকে। এছাড়া কোন একটি প্রতিষ্ঠান প্রত্যয়ন পত্রের মাধ্যমে আপনাকে কোথাও সুপারিশ করতে পারে।
আজকের পোস্টে আমরা প্রত্যয়ন পত্রের জন্য কিভাবে আবেদন করবেন এবং প্রত্যয়ন পত্র কিভাবে লিখবেন সেটা নিয়ে আলোচনা করব।
আরো পড়ুন
ট্রেজারি চালান কিভাবে পরিশোধ করবেন
প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন
আপনি চাইলেই ইউনিয়ন পরিষদ বা কাউন্সিলর অফিস থেকে খুব সহজেই নিজের পার্সোনাল প্রত্যয়ন পত্র তৈরি করে নিতে পারেন। তবে বেশিরভাগ সময়ে আপনি ইউনিয়ন পরিষদ বা কাউন্সিলের অফিসে গেলে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হবেন। কারণ আপনি ইউনিয়ন পরিষদের বা কাউন্সিলের অফিসে গেলে দায়িত্ব প্রাপ্ত বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নাও পেতে পারেন। আর তাদের স্বাক্ষর ছাড়া ওই প্রত্যায়নপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।
তাই আপনি চাইলে এই (https://prottoyon.gov.bd/) ওয়েবসাইট থেকে আপনার প্রত্যয়ন পত্রের ধরন নির্বাচন করে বিভিন্ন তথ্য পূরণ করে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার ইউনিয়ন পরিষদ বা কাউন্সিলর অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর লাগবে। তাই আমি বলব অনলাইনে আবেদন না করে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ বা কাউন্সিলের অফিসে গিয়ে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য আবেদন করুন।
প্রত্যয়ন পত্রের প্রকারভেদ
প্রত্যয়নপত্র অনেক ধরনের হতে পারে, নিচে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:
১. উত্তরাধিকার সনদ
২. মৃত্যু সনদ
৩. জাতীয়তা সনদ
৪. চারিত্রিক সনদ (প্রতিষ্ঠান)
৫. মুক্তিযোদ্ধা সনদ
৬. বিবাহিত সনদ
৭. আর্থিক সহায়তা সনদ (প্রতিষ্ঠান) ইত্যাদি
প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম
নিচে প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল ।
স্কুল-কলেজ ভিত্তিক প্রত্যয়ন পত্র
১. প্রথমে আপনি যেভাবে দরখাস্ত লিখেন ঠিক তেমনি আপনার প্রিন্সিপাল বরাবর প্রত্যয়ন পত্র লিখবেন।
২. তারপর উপরের ছবির মত হুবহু কপি করে চাইলে দেখতে পারেন। সেখানে আপনার নাম, রোল নম্বর, আপনার বিভাগ, সেশন ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।
——-
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক প্রত্যয়ন পত্র
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক পদত্যাগপত্রগুলো অনেকটা কলেজভিত্তিক প্রত্যায়নপত্রের মতই। ওই জায়গায় আপনি প্রিন্সিপাল বরাবর প্রত্যায়নপত্র লিখছেন কিন্তু এখন আপনি প্রধান শিক্ষক বরাবর প্রত্যয়ন পত্র লিখবেন। উপরের ছবিতে উল্লেখ করা হলো।
চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র
চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র গুলো সাধারণত নিজে লেখা হয়না। এই ধরনের প্রত্যয়ন পত্র আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদ বা কাউন্সিলর অফিস থেকে সরাসরি গিয়ে নিতে হবে। তবুও আপনাদের জন্য উপরে একটি ডেমো দেওয়া হলো।
চারিত্রিক সনদপত্র লেখার নিয়ম
এই মর্মে প্রত্যয়ন করা হচ্ছে যে, নাম-মোঃ করিম উদ্দিন ,পিতা-মোঃ হাসিম উদ্দিন, মাতা- হাজেরা বেগম। ঠিকানা: মিরপুর, , কুমিল্লা। তিনি আমার পরিচিত। তার নৈতিক চরিত্র বেশ ভালো এবং ব্যবহার বেশ আন্তরিক।
এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোন কাজে তাকে আমরা জড়িত থাকার খবর পাইনি ,আমি তার ভবিষ্যৎ জীবনের সাফল্য কামনা করছি।
চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলর অথবা প্রতিষ্ঠান সাক্ষর:
কার্যালয়ের সিলমোহরঃ
নাগরিক সনদপত্র লেখার নিয়ম
এই মর্মে প্রত্যয়ন করা হয়েছে যে, নাম-মোঃ হুমায়ুন কবির,পিতা- মোঃ রহিম, মাতা: হাজেরা বেগম। গ্রাম: লালমাটি, পোস্ট অফিস: লালমাটি বাজার, থানা:সদর দক্ষিণ জেলা:কুমিল্লা তিনি এই এলাকার একজন স্থায়ী বাসিন্দা।
তিনি রাষ্ট্রবিরোধী কোন কর্মকান্ডের যুক্ত নয়। আমি তার ভবিষ্যৎ জীবনের পরিপূর্ণ সাফল্য কামনা করছি।
চেয়ারম্যান বা কাউন্সিলর এর স্বাক্ষরঃ
কার্যালয়ের সিলমোহরঃ
আজকের পোস্ট নিয়ে সেস কথা
পরিশেষে, আপনি যেই ধরনের প্রত্যায়ন পত্র নেন না কেন, সেগুলো আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটার টাইপ করে নিতে হবে। কারণ বর্তমানে হাতে লেখা প্রত্যয়ন পত্র বেশিরভাগ জায়গায় গ্রহণ করে না। আমি উপরে যে ডেমো গুলো দিয়েছি আপনি চাইলে হুবহু সেই রকম ভাবে লিখে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর এবং সিলমোহর দিয়ে, আপনি সেই প্রত্যয়ন পত্রটি ব্যবহার করতে পারবেন।
মনে রাখবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর এবং প্রাতিষ্ঠানিক সিল ছাড়া আপনার প্রত্যয়ন পত্রটি বাংলাদেশ এর কোথাও গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই অবশ্যই প্রত্যয়ন পত্র তৈরি করে সেটার মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাক্ষর এবং প্রাতিষ্ঠানিক সিলমোহর করে নিবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে ।
আরো পড়ুন
Pingback: অফিসিয়াল দরখাস্ত লেখার নিয়ম দেখুন - Trick Services
Pingback: অফিসিয়াল দরখাস্ত লেখার নিয়ম – Web Stories
Pingback: অফিসিয়াল দরখাস্ত লেখার নিয়ম ২০২৩ – Web Stories